• E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০৬ পূর্বাহ্ন

×

খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের বেহাল দশা সমাধান শুধুমাত্র গোলক ধাঁ ধাঁ

  • প্রকাশিত সময় : রবিবার, ২৩ জুন, ২০২৪
  • ৩৩ পড়েছেন

মো.আরিফুর রহমান,খুলনা:
খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক হয়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ। রাস্তার বেহাল দশার কারনে দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু। আবার কোথাও বড় আকৃতির টিলা জেগে উঠেছে। যাতায়াতকারীরা যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন বলে আশংকা সাধারন মানুষদের। নিম্ন মানের কাজের কারনে এরকম বেহাল দশার অভিযোগও তুলছেন সাধারন মানুষ। তবে সড়ক বিভাগ বলছে, পূর্বের তুলনায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। এ সড়ক দিয়ে বেনাপোল ও ভোমরা বন্দরগামী পণ্য নিয়ে ভারী যানবাহনের চাপ বেড়েছে। সড়কটির সর্বোচ্চ ওজন নেয়ার সক্ষমতা সাড়ে ২২ মেট্রিক টন হলেও এ দুই বন্দর থেকে ৫০ মেট্রিক টনের যান চলছে নিয়মিত। চাপ নিতে না পারায় দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যস্ততম এ সড়কটি।তথ্য সূত্রে, খুলনা-সাতক্ষীরা আঞ্চলিক মহাসড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৬৪ কিলোমিটার। সড়কটি পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে এবং শেষ হয় ২০২০ সালের জুনে। খুলনা অংশের এ ৩৩ কিলোমিটার সড়ক পুননির্মান ও প্রশস্ত করার জন্য ব্যয় হয় ১৬০ কোটি টাকা। সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটির ডুমুরিয়ার দিকে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা উঁচু-নিচু হয়ে গেছে। গুটুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মোড় থেকে উপজেলা পরিষদের সামনে পর্যন্ত আধা কিলোমিটার রাস্তাও উচু নিচু হয়ে পড়েছে। আরও
বেশ কয়েকটি স্থানে পিচ দেবে তৈরী হয়েছে গর্ত। বিভিন্ন স্থানে প্রায় তিন থেকে চার কিলোমিটার সড়কের এমন বেহাল অবস্থা। ৬০ কিলোমিটারের পুরো সড়কটির এ বেহাল দশায় ব্যবহারে হয়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ন। স্থানীয় এবং চলাচলকারীরা জানান, অপ্রস্তুত অবস্থায় নতুন চলাচলকারী কেউ এ রাস্তা ব্যবহার করলে দুর্ঘটনার শিকার হবেন। বর্তমানে সড়কের টার্নিং পয়েন্ট গুলোর অবস্থা খুবই বাজে। ছোট যানবাহনগুলো অনেক সময় উল্টে যাওয়ার উপক্রমে থাকে যাওয়া আসার সময়। মোটর বাইক ব্যবহারকারীদের সাইডের পায়ে হাটার অংশ দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। নইলে দুর্ঘটনার আশংকা থেকেই যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা ফেরদৌস হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, রাস্তা নির্মানের দপ্তরটির আরও দুরদর্শি হতে হতো। দুরদর্শীতার অভাবেই এরকম দায় সাড়া কাজ হয়েছে। এ রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করতেছে বহু আগে থেকে। বর্তমানে পদ্মা সেতুর বদৌলতে এ যান চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট দপ্তরটির গুরুত্বপূর্ন পদক্ষেপ নিতে হতো। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, নিম্নমানের কাজ হওয়ায় রাস্তার এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। উঁচু-নিচু এ সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। প্রায়ই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। নিম্ন মানের কাজ না হলে এমন কোথাও উঁচু আবার কোথাও নিঁচু হওয়ার কথা না। সংশ্লিষ্ট সকলে এ রুপ অস্থার দায় এড়াতে পারেন না। এ সড়ক ব্যবহারকারী আরশাদুল হক লিমন বলেন, আমার বাসা আঠাঁরো মাইল। খুলনা প্রায় সময়ই যাতায়াত করি। তবে রাস্তার সমস্যার কারনে এখন ঠিক ভাবে মোটর বাইক চালানো সম্ভব হয় না। আর বাস ট্রাক চলাচল করতে দেখলেও ভয় লাগে। অনেক সময় এমন অবস্থা দেখায় যে, এই মনে হয় উল্টে গেলো। সড়কটি মাত্র কিছুদিন হলো তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই কেন এ অবস্থা তৈরি হবে? বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। পরিবহন শ্রমিক ফরহাদ হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ এ সড়কটি ব্যবহার করছি। আর আগে ছোট ছোট গর্ত হতো। তাও মেনে নিয়ে চলতাম। এখন কোথাও পাহাড়, কোথাও ঠালা। ট্রাক পিকাপ উল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশী।

পরিবহনের চালক হায়দার আলী বলেন, বিভিন্ন সময়ে এ সড়কে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। গাড়ি উল্টে যায়। একটি রানিং গাড়ির রাস্তার জটিলতার কারনে ব্রেকিং এর সময়েও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যার কারনে এ সড়কে দুর্ঘটনা বেড়েছে। সড়কে আগের থেকে অনেক বেশি জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় আছে। নাগরিক নেতারা বলছেন, খুলনা- সাতক্ষীরা মহাসড়কটি এখন গুরুত্বপর্ন যাতায়াতের একটি মহাসড়ক। মহা সড়কটির ক্ষতিগ্রস্থ অংশ দ্রুত সময়ে পুন নির্মান করতে হবে। আর এ বহুল ব্যবহৃত সড়কটি আরো শক্তিশালী ভাবে পুন নির্মানের ব্যবস্থা করতে হবে এবং দীর্ঘদিন টেকশই হয় এমন মানের কাজ বাস্তবায়ন করতে হবে। খুলনা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান মাসুদ জানান, দুই বছর আগেও যেখানে এ সড়কে সর্বোচ্চ ১০ হাজার যানবাহন চলতো এখন তা বেড়ে ২০ হাজারে বেড়ে দাড়িয়েছে। এ সড়কে সর্বোচ্চ সাড়ে ২২ মেট্রিক টন পণ্য নিয়ে যানবাহন চলার অনুমতি থাকলেও নিয়মিত ৫০ মেট্রিকটনের ট্রাক চলছে। ওভার লোডিং ও গাড়ির চাপ বাড়ার কারণে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই সড়কটি এখন আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী সড়কটি ৬ লেনে উন্নীত করা হবে। সাম্ভ্যবতা যাচাই শেষে প্রকল্পটি এখন একনেকে ওঠার অপেক্ষা। এছাড়া সড়কটি যেসব জায়গায় পিচ ডেবে যাচ্ছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি ভিত্তিতে তা মেরামত করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA